শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৫:০০ অপরাহ্ন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস ৪ জুলাই

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস ৪ জুলাই

মতিলাল দেব রায়: আজ ৪ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি স্টেটে যথাযথ মর্যাদায় এই দিনটি পালিত হচ্ছে। আমেরিকার সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে জানা যায়, ক্রিস্টোফার কলম্বাস সর্বপ্রথম এই আমেরিকা আবিস্কার করেন। সেজন্য অনেকেই এটাকে কলোম্বাস দিবস হিসেবেও পালন করে থাকে।
ষষ্ঠ সেঞ্চুরিতে আয়ারল্যান্ড-এর একজন সন্ন্যাসী সেন্ট ব্রেনডেন নর্থ আমেরিকা ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি আয়ারল্যান্ড থেকে কাঠের ফ্রেমের উপর পশুর চামড়া দিয়ে ঢাকা একটি নৌকায় উত্তর আমেরিকায় এসেছিলেন। তিনি ইউরোপের ব্যাপক ভ্রমণ করতেন। ১০ম সেঞ্চুরিতে ভাইকিং-এর নর্থ আমেরিকা ভ্রমণ যার দালিলিক প্রমাণ বিভিন্ন স্কলার উদ্ধৃত করেছেন-অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সোমবার মানেই আমেরিকানদের জন্য বিশেষ এক ছুটির দিন। কলম্বাস দিবস উদযাপন করা আমেরিকানরা ইতালিয়ান অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাসের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতেই জাঁক-জমকভাবে দিনটি অতিবাহিত করেন। কলম্বাস যখন আমেরিকার মাটিতে পা রেখেছিলেন, তারিখটি ছিল ১২ অক্টোবর ১৪৯২। কলম্বাসের ১৪৯২ সাল থেকে ১৫০২ সাল পর্যন্ত চারটি বিখ্যাত অভিযানের পথ ধরেই কানাডার উত্তর প্রান্ত থেকে চিলির দক্ষিন প্রান্ত পর্যন্ত সব জায়গাতেই নিজেদের উপনিবেশ স্থাপন করেছিলেন, স্প্যানিশ, পতুর্গীজ, ডাচ, ব্রিটিশ এবং ফ্রেন্সরা। কলম্বাসের আমেরিকা আবিস্কারের মাধ্যমেই এই স্থানটির গোড়াপত্তন হয়।
আমেরিকার কিভাবে নামকরণ হয়, তা আমরা অনেকেই জানিনা। উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা দুটি স্বতন্ত্র মহাদেশ। আমেরিকা মহাদেশ আবিস্কার করেছিলেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস। কিন্তু কলম্বাসের নামে একটি মাহাদেশের নামকরণ করা হয় নাই। কলম্বাস ছিলেন একজন বিখ্যাত ইতালীয় নাবিক। পঞ্চদশ শতাব্দীর দিকে ভারতবর্ষের ঐশ্বর্য্যরে কথা ইউরোপসহ সমগ্র বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন ইউরোপ থেকে স্থলপথে ভারতবর্ষে আসা যেত, তবে সেটা ছিল খুবই কষ্টসাধ্য। ভারতের সুনাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই চায় স্থলপথ ছাড়া ও সমুদ্রপথে ভারতে আসতে। আর সেটার জন্য চলছিল ইউরোপ থেকে ভারতে আসার জলপথের সন্ধান। ইতালীয় পর্যটক করম্বাস নৌপথে ভারতে আসার জন্য জাহাজ নিয়ে ভারতবর্ষের খোঁজে বের হন। ১৪৯২ খ্রীস্টাব্দের ১২ ই অক্টোবর তিনি একটি দ্বীপে পোঁছান। দ্বীপটি ছিল বাহাম দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত যার পূর্বে নাম ছিল সান-সালভেদর। বর্তমান নাম ওয়ূামলিং আইল্যান্ড। কলম্বাস স্পেনের রাজা ফার্ডিনান্দ ও রাণী ইসাবেলার সম্মানে এই দ্বীপের নাম রাখেন সান-সালভেদর। কলম্বাস এই দ্বীপে পৌঁছে ভেবেছিলেন তিনি ভারতে পৌঁছে গেছেন। সেই সূত্রধরে বর্তমান আটলান্টিক মহাসাগরের এই সকল দীপপুঞ্জ সমূহকে একত্রে বলা হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা পশ্চিম ভারতীয় দীপপুঞ্জ। এরপর কলম্বাস জাপানের পথে পাড়ি দিতে গিয়ে সান-সালভেদরের দক্ষিনে হিসপানিয়োলায় পৌঁছান, তারপর তিনি কিউবায় গিয়ে পৌঁছান। ১৪৯৮ খ্রীস্টাব্দে তৃতীয় নৌ-যাত্রায় কলম্বাস প্রথমে ত্রিনিদাদ এবং তারপর গিয়ে পৌঁছান দক্ষিন আমেরিকা মহাদেশের বর্তমান ভেনিজুুয়েলাতে। এদিকে সমুদ্রপথে ভারতবর্ষ আবিস্কারের যখন এইসব কান্ড চলছিল, তখন এক স্পেনীয় নাবিক ঘোষণা করেন যে, দক্ষিন আমেরিকা মহাদেশের মূল ভূ-খন্ড পূর্বেই তিনি ১৪৯৭ খ্রীস্টাব্দের ১৬ জুন আবিস্কার করে এসেছেন। এই নাবিকের নাম ছিল আমেরি গো ডেসপুচ্চি। অবশ্য বিশেষজ্ঞদের মত হলো, তিনি ১৪৯৯ খ্রীস্টাব্দের আগেই সমুদ্র যাত্রা করেন নি কারণ সে বছরই আলান্সো দে ওখেদা ও ডেসপুচ্চি দক্ষিন আমেরিকায় গিয়েছিলেন কলম্বাস যেমন স্পেনের রাজার সাহায্যে সমুদ্র যাত্রা করেন, আমেরি গো ডেসপুচ্চি তেমনি পতুর্গালের পতাকার নীচে ১৫০১ এবং ১৫০৪ খ্রীস্টাব্দে যাত্রা করে দক্ষিন আমেরিকার ব্রাজিলে গিয়ে উপস্থিত হন। ডেসপুচ্চি এটা ঠিকই বুঝেছিলেন যে কলম্বাস যাকে ভারতবর্ষ ভেবে ভুল করেছিলেন, সেটা আসলে একটা অনাবিস্কৃত নতুন মহাদেশ। ডেসপুচ্চির নিজের সমুদ্র যাত্রার বিষয়ের উপর লেখা এতই প্রসিদ্ধ লাভ করেছিল যে, তাকে দক্ষিন আমেরিকার আবিস্কারক হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে তার নাম স্মরণ করে রাখার জন্য আবিস্কৃত মহাদেশের নামকরণ হয় আমেরিকা।
জার্মানির ভূ-গোলবিদ ভাল্ডয়ে মূলার ব্রাজিলকে আমেরিগোর সম্মানার্থে আমেরিকা আখ্যা দেন। আমেরিকা নামটা এতই প্রচলিত হয়ে পড়ে যে, ব্রাজিল থেকে উত্তর আমেরিকা আর দক্ষিন আমেরিকা পর্যায়ক্রমে দুই মহাদেশের নামকরণ হয় আমেরিকা। ধারণা করা হয়, আমেরিকার আদিম অধিবাসীরা সম্ভবত: এশীয় বংশোদ্ভূত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূ-খন্ডে এরা কয়েক হাজার বছর ধরে বসবাস করে। তবে নেটিভ আমেরিকানদের জনসংখ্যা ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপনের পর থেকে মহামারী ও যুদ্ধ বিগ্রহের প্রকোপে ব্যাপকহারে হ্রাস পায়। প্রাথমিক পর্যায়ে আটলান্টিক মহাসাগরের তীরবর্তী উত্তর আমেরিকায় ১৩টি ব্রিটিশ উপনিবেশ নিয়ে গঠিত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই এই উপনিবেশগুলি একটি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে। এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে উপনিবেশগুলি তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার ঘোষণা করে এবং একটি সমবায় সংঘের প্রতিষ্ঠা করে। আমেরিকায় স্বাধীনতা যুদ্ধে এই বিদ্রোহী রাজ্যগুলি বৃটেনকে পরাস্থ করে। এই যুদ্ধ ছিল উপনিবেশিকতার ইতিহাসে প্রথম সফল উপবিবেশিক স্বাধীনতা যুদ্ধ। ১৭৮৭ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর ক্যালিফোর্নিয়া কনভেনশন বর্তমান মার্কিন সংবিধানটি গ্রহন করে। পরের বছর এই সংবিধান স্বাক্ষরিত হলে যুক্তরাষ্ট্র একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার সহ একক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
১৭৯১ সালে স্বাক্ষরিত এবং ১০টি সংবিধান সংশোধনী সম্বলিত বিল অফ রাইট্স একধিক মৌলিক নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো ও রাশিয়া থেকে জমি অধিগ্রহন করে এবং টেক্সাস প্রজাতন্ত্র ও হাওয়াই প্রজাতন্ত্র অধিকার করে নেয়। ১৮৬০’র দশকে রাজ্য সমুহের অধিকার ও দাস প্রথার বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রামীন দক্ষিনাঞ্চল ও শিল্পোনত উত্তরাঞ্চলের বিবাদ এক গৃহযুদ্ধের জন্ম দেয়। উত্তরাঞ্চলের বিজয়ের ফলে দেশের চিরস্থায়ী বিভাজন রোধ করা সম্ভব হয়। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রে দাসপ্রথা আইনত: বন্ধ করা হয়। ১৮৭০’র দশকেই মার্কিন অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির শিরোপা পায়। স্পেন-মার্কিন যুদ্ধ ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সামরিক শক্তি হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠা দান করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই দেশ প্রথম পরমানু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং রাষ্ট্র সংঘে নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে।
আদিবাসী আমেরিকা ও ইউরোপীয় উপনিবেশ:
যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূমি এবং আলাস্কাতে বর্তমানে যে আদিবাসীরা বাস করে তারা এশিয়া থেকে অভিবাসী হয়ে এ অঞ্চলে এসেছিল। আজ থেকে প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে থেকে আসা শুরু করেছিল বলে ধারণা করা হয়। কমপক্ষে ১২০০ বছর আগে তাদের আসার ব্যাপারটি তো প্রায় নিশ্চিত। কোন ও অঞ্চল বা ভূ খন্ডকে উপনিবেশে পরিণত করার চর্চা অনেক প্রাচীন, গ্রীক, রোমান, পারস্য আরো অনেক প্রাচীন সা¤্রাজ্য এই কাজ নিয়মিত করেছে। মধ্যযুগের কাছাকাছি সময়ে এসে আরবরা ও তুর্কিরা একই কাজ করেছে। সেই সময়ে যেসব প্রাচনি সা¤্রাজ্য অন্য নবীন ভূখন্ড নিজের করদ রাজ্যে পরিণত করতো তার পিছনে যে যুক্তি কাজ করতো, তা হচ্ছে এটা তাদের অধিকার। তারা মানবজাতির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। অন্যকে শাসন করা তাই অধিকারের মধ্যে পড়ে। এর পিছনে সম্পদ হরণের লোভ যে ছিলনা তা নয়। কিন্তু তার আগে গৌরবটাকে বেশী করে দেখা হতো।
ষোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপিয়ানরা এই গৌরবতত্বের চর্চা থেকে বেরহয়ে আসে। তারা বেশ উদাম হয়েই ঘোষণা করে আমার মুনাফার জন্য অন্য দেশকে করায়ত্ব করি। আমেরিকা ক্রিস্টোফার কলম্বাস আবিস্কার করেন এটা আমরা সবাই জানি। তিনি স্পেনের রাণী ইসাবেলার ব্যক্তিগত অর্থে ৩টা জাহাজ ভাসিয়ে ভারতে আসতে গিয়ে আমেরিকায় উপস্থিত হন। ব্রিটিশরা স্পেনিশের পিছু পিছু এসে হাজির হয় ফ্লোরিডাতে। ধরণা করা হয় প্রথম বৃটিশ সেটেলার আসেন ১৬২০ সালে ফ্লোরিডা তখন স্পেনের অধীনে। চালাক বৃটিশরা স্পেনিশদের সাথে সংঘাতে জড়ায় নাই। স্পেন উত্তর আমেরিকার দিকে সা¤্রাজ্য বিস্তারে মনোযোগ দেয়, ব্রিটিশরা আজকের যে আমেরিকা আমরা চিনি, তার ১৩টা রাজ্যকে নিজেদের মুল্লুকে পরিণত করে। এর বাহিরেও তাদের অনেক রাজ্যে তাদের অবস্থান ছিল। অবস্থান কিন্তু খুব পাকাপাকি ছিল না। এই ১৩টি কলোনী মূলত: ইংরেজী ভাষাভাষীদের দখলে থাকায় তাদের ধর্ম ছিল প্রটেস্টান ক্রীশ্চিয়ানিটি। ধর্মের কথা এখানে উল্লেখ করা হলো, কারণ সেসময় ধর্ম এক ছাতার নীচে আসার একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক ছিল। বৃটিশদের কর চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা আমরা ইতিহাস থেকে জানি।
একই ঘটনা তারা ১৩টি রাজ্যে করেছিল ১৭৫০ সাল সময় হতে । ফলে সেখানে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। রাজ্যগুলির স্বাধীনচেতা মানুষের লক্ষ্য ভাষা, সংস্কৃতি এক থাকায় বয়স্কদের মধ্যে এক যোগাযোগ ঘটিয়ে ক্রমান্বয়ে তারা দুইটা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন, একটি হচ্ছে রাইট অব ইংলিশ ভাষাভাষীদের আটকের আইন। অন্যটি হচ্ছে “নো টোক্সেশন উইথআউট রিপ্রেজেন্টেশন” এর ব্যাপকতা আসলে অল্প কয়েক শব্দে বুঝানো সম্ভব নয়, এটা আসলে একটি শ্লোগান। ১৬৮৯ সালে বৃটিশ পার্লাম্যান্টে চাকুরি দেয়ার থেকে ইংরেজী ভাষাভাষী এবং ব্রিটিশদের রেফার্ট দেয়া হয়।
আমেরিকার ১৩টি রাজ্যে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে ১৭৫০ সাল থেকে ১৭৬০ সাল নাগাদ এই ধারণা ছড়িয়ে পড়ে তাদের উপর অতিরিক্ত কর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইংরেজী ১০০ ধারা মোতাবেক তা তারা পাচ্ছেনা। বৃটিশদের জন্য যত কালা-কানুন করেছিল সব তাদের উপর নিয়মিতভাবে প্রয়োগ হচেছ। কিন্তু যে আইনগুলি তাদের জন্য তা কাগজে-কলমে আছে-প্রয়োগ নাই।
১৭৫০-১৭৬০ সালের মধ্যে তাহারা বুঝতে পারে ১৩ টি বৃটিশ কলোনীর স্বাধীনচেতা মানুষেরা মিলে সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা স্বাধীনতার জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিবে। কলোনীগুলি হচ্ছে: ডেলোয়ার, পেনসিলভেনিযা, নিউজার্সী, কানেকটিকাট, ম্যারিল্যান্ড, ম্যাসাচুয়েট্স, ভার্জিনিয়া, নিউ হ্যাম্পসায়ার, সাউথ ক্যারোলিনা ও নর্থ ক্যারোলিনা, রোড আইল্যান্ড, নউইয়র্ক এবং প্রান্টেশন প্রভিডেন্স। ১৭৬০ সালের ২রা জুলাই তারা সম্মিলিতভাবে “ইউনাইটেড অব স্টেটস” নামের দেশ হিসাবে ঘোষণা দেয় যদিও তারা স্বাধীনতা দিবস পালন করে ৪ঠা জুলাই। জুলাই মাসের ৪ তারিখ যেহেতু এই ঘোষণা নামা প্রকাশ করা হয় তাই সর্বসম্মতিক্রমে এই দিনটিকে তারা বেছে নেয়।
আমেরিকার স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতার পরপর গণতন্ত্রের শক্ত ভীত স্থাপনের জন্য ১৭৭০ সালে আমেরিকার বিখ্যাত ইতিহাসবিদ রিচার্ড মরিস ৭জনকে স্থপতি পিতা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়, তারা হচ্ছেন: জন স্মিথ, জর্জ ওয়াশিংটন, টমাস জেফারসন, জেমস মেডিসন, জন জে, বেঞ্জামিন ফ্রান্কলিন, আকেজান্ডার হেমিলটন। এদের মধ্যে ৩ জন যথাক্রমে জন এডামস, টমাস জেফারসনস, বেঞ্জামিন ফ্রান্কলিন স্বাধীনতা ঘোষণা দলিলপত্রের খসড়া তৈরী করেন। জেমস এডিসন, জন জে, আলেকজান্ডার হেমিলটন সংবিধান তৈরী করেন, যা ধাপে ধাপে ১৭৮৭ থেকে ১৭৮৮ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়। ইতিহাসে যা বিখ্যাত দ্য ফেডারেল্স পেপার হিসেবে। জর্জ ওয়াশিংটন স্বাধীনতা যুদ্ধের সমরে নেতৃত্ব দেন। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও কিন্তু অনেক বিরোধী ছিল যারা স্বাধীনতার পক্ষে ছিলনা, তাদেরকে বলা হতো টোরি বা লয়ালিস্ট। এই লয়েলিস্টরা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গিয়ে ব্রিটেনের রাজা ২য় জর্জের আনুগত্য প্রকাশ করে। এই লয়েলিস্টদের মধ্যে দুটি ভাগ ছিল, এরা স্প্যাসিফিস্ট, এবং একটিভিস্ট নামে পরিচিত। তখনকার ইতিহাসবিদ রবার্ট মিডল-এর মতে ৫০-৬০ ভাগ ছিল স্বাধীনতাকামী ১৫-২০ ভাগ ছিল স্বাধীনতার বিপক্ষে এবং ২০ ভাগের মতিগতি বুঝা যায় নাই, এই গ্রুপটি চুপচাপ ছিল । যুদ্ধের প্রাথমিক কয়েক বছরে কার্যত কোনও কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা ছিলনা। প্রতিটা স্টেট বা কলোনী যে যার মত করে নিজ নিজ প্রশাসন চালাতো। কিন্তু একটা ব্যাপারে তাদের মধ্যে একটি গায়েবী সমঝোতা হয়ে গিয়েছিল লয়ালিস্ট বা বেঈমান পেলে মেরে ফেলো। আমেরিকার জাতীয় বেঈমানদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হবার আগেই এত আতংক ছড়িয়ে পড়ে যে তারা পালে পালে বৃটিশ সা¤্রাজ্যভূক্ত অন্যান্য জায়গায় আশ্রয় নিতে শুরু করে।
সূত্রমতে, প্রায় ৬০ হাজার স্বাধীনতা বিরোধী বা লয়েলিষ্টরা দেশ ছাড়ে। এদের মধ্যে ৪০ হাজার পাড়ি জমায় বৃটিশ অধিভূক্ত কানাডায়, ১০ হাজার ইংল্যান্ডে, বাকিরা কোরিয়ান দীপপুঞ্জ। তারপর শুরু হয় লয়েলিস্টদের স্বস্তির পালা-গণহারে খুন। বিজয়ের প্রথম দিকে ক্ষোভে, ঘৃণায় জান্তব হয়ে উঠে। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে ১৭৭৫ সালে আরেক নায়ক স্যাম এডামস বাদবাকী নেতাদের উৎসাহে গঠন করেন, ‘সন্স অব লিবার্টি’। যার প্রধান কাজগুলোর মধ্যে একটি ছিল স্বাধীনতা বিরোধীদের খুন করা। অবস্থা বেগতিক আকার ধারণ করলে কিছুদিনের মধ্যে আমেরিকার স্বাধীন সরকার এই মর্মে আইন প্রণয়ন করেন যে, লয়ালিস্টদের মধ্যে যারা অপরাধ করেন নাই কিন্তু স্বাধীনতায় বিরোধিতা করেছে তারা যদি কাগজে-কলমে রীতিমত বাইবেল ছুঁয়ে আমেরিকার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন, তবে তারা আইনের সুরক্ষা পাবেন। তারপর আনুগত্য প্রকাশের হিড়িক পড়ে যায়। ইতিহাসবিদ রবার্ট ক্যালহোনের মতে, প্রায় ৫ লক্ষ লয়ালিস্ট ছিল। তাদের এক-তৃতীয়াংশ বৃটিশদের সহায়তা করে, বাকীরা চুপচাপ ছিল। ১৯৬৮ সালে রবার্ট ম্যাডিকেফেট-এর গবেষণা মতে প্রায় ৫০ হাজার লয়ালিস্টদের মেরে ফেলা হয়।
কলম্বাস পূর্বের আমেরিকা: যুক্তরাষ্ট্রের মূলভূমি এবং আলাক্সাতে বর্তমানে যে আদিবাসীরা বাস করে তারা এশিয়া থেকে অভিবাসী হয়ে এ অঞ্চলে এসেছিল। তারা আজ থেকে প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে থেকে আসার শুরু করেছিল বলে ধারণা করা হয়। কমপক্ষে ১২ হাজার বছর আগে তাদের আসার ব্যাপারটি তো প্রায় নিশ্চিত। প্রাক-কলম্বীয় যুগের অনেক আদিবাসী সম্প্রদায়ই অগ্রসর কৃষি, স্থাপত্য এবং রাজ্য-সদৃশ সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। ইউরোপীয় অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৪৯৩ সালের নভেম্বর ১৯ তারিখে আমেরিকা অঞ্চলের পুয়র্টোরিকোতে এসেছিলেন। তাঁর মাধ্যমেই আদিবাসী আমেরিকানদের সাথে ইউরোপীয়দের প্রথম পরিচয় হয়। এরপর অধিকাংশ আমেরিকান আদিবাসীরাই ইউরেশিয়া অঞ্চলে মহামারী রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
সে সময় আমেরিকায় ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপনকারীদের বাসস্থান ছিল মূলত: ফ্লোরিডায়। সেই ঔপনিবেশিক কলোনীগুলোর মধ্যে বর্তমানে কেবল ১৫৬৫ সালে স্থাপিত সেন্ট অগাস্টিন কলোনীটিই টিকে আছে। এছাড়া ফরাসি পশুর লোম ব্যবসায়ীরা গ্রেট লেকসের নিকটে নিউ ফ্রান্স নামক একটি বাস স্থল গড়ে তুলেছিল। এরপর স্পেনীয়রা বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বিস্তৃত উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে । এই অঞ্চল মেক্সিকোর অন্তর্গত। প্রথম সফল ইংরেজ উপনিবেশ ছিল ১৬০৭ সালে জেমসটাউনে প্রতিষ্ঠিত ভার্জিনিয়া কলোনী এবং ১৬২০ সালে প্রতিষ্ঠত প্লাইমাউথ কলোনী। ১৬২৮ সালে ম্যাসাচুসেটস বে কলোনী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি অর্থায়নের পর ইংরেজদের মধ্যে অভিবাসনের জোয়ার বয়ে যায়। ১৬৩৪ সালে মধ্যে নিউ ইংল্যান্ডে প্রায় ১০,০০০ পিউরিটান বাসস্থান গড়ে তোলে। ১৬১০-এর দশকের শেষ দিকে ব্রিটিশ সেদেশর বিপ্লবীদের মধ্যে ৫০,০০০ জনকে আমেরিকায় ব্রিটিশ কলোনীসমূহে স্থানান্তর করে। ১৬১৪ সাল থেকে নেদারল্যান্ডের উপনিবেশিকরা হাডসন নদীর নি¤œ ভূমি জুড়ে এবং ম্যানহাটন দ্বীপ ও নিউ আমস্টারডামে বসতি গড়ে তুলেছিল। ১৬৩৮ সালে সুয়েডীসরা ডেলওয়ার নদীর পাশ জুড়ে ছোট একটি উপনিবেশ গড়ে তুলেছিল যার নাম ছিল নিউ সুইডেন। কিন্তু ১৬৫৫ সালে ডাচরা তা অধিকার করে নেয়।
ফরাসি এবং ভারতীয় যুদ্ধের মাধ্যমে প্রায় ৭ বছর ধরে ঔপনিবেশিক সম্প্রসারণ চলতে থাকে। ব্রিটেন ফ্রান্সের কাছ থেকে কানাডা দখল করে নেয়। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলীয় কলোনীসমূহ থেকে ফ্রাঙ্কোফোনের জনগণরা রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন ছিল। ১৬৭৪ সালে ইঙ্গ-ডেনীয় যুদ্ধে ডাচদেরকে পরাজিত করে বি্েরটন প্রাক্তণ ডাচ কলোনীসমূহ দখল করে নেয়। এর পর প্রাক্তন নিউ নেদারল্যান্ডের নাম রাখা হয় নিউ ইয়র্ক।১৭২৯ সালে ক্যারোলিনাসমূহের বিভাজন এবং ১৭৩২ সালে জর্জিয়ার উপনিবেশিকীকরণের পর ১৩টি পৃথক পৃথক ব্রিটিশ কলোনী সৃষ্টি হয়। এই ১৩টি কলোনী মিলেই পরবর্তীকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। যা হোক, রাজ্যগুলোর প্রত্যেকটিতে সক্রিয় স্থানীয় এবং উপনিবেশিক সরকার ছিল যা স্বাধীন মানুষদের নির্বাচনের মাধ্যমে জন্ম লাভ করতো। রাজ্যগুলোর চেতনার মূলে ছিল ইংরেজদের প্রাচীন অধিকারের প্রতি আত্ম নিবেদন এবং স্ব-নিয়ন্ত্রিত সরকার পদ্ধতির অনুপ্রেরণা যা পরবর্তীকালে প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্ম দেয়। সবগুলো রাজ্যেই আফ্রিকান দাসদের নিয়ে বাণিজ্য করা বৈধতা পেলো। উচ্চ জন্ম হার, নি¤œ মৃত্যু হার এবং চিরস্থায়ী অভিবাসনের কারণে কলোনীগুলোর জনসংখ্যা প্রতি ২৫ বছরে দ্বিগুণ হয়ে যেতে থাকে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো ও রাশিয়ার থেকে জমি অধিগ্রহন করে এবং টেক্সাস প্রজাতন্ত্র ও হাওয়াই প্রজাতন্ত্র অধিকার করে নেয়। ১৮৬০-এর দশকে রাজ্যসমূহের অধিকার ও দাসপ্রথার বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ দক্ষিণাঞ্চল ও শিল্পোন্নত উত্তরাঞ্চলের বিবাদ এক গৃহযুদ্ধের জন্ম দেয়। উত্তরাঞ্চলের বিজয়ের ফলে দেশের চিরস্থায়ী বিভাজন রোধ করা সম্ভব হয়। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রে দাসপ্রথা আইনত রদ করা হয়। ১৮৭০-এর দশকেই মার্কিন অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির শিরোপা পায়। স্প্যানিশ-আমেরিকান যুদ্ধ ও প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ সামরিক শক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠা দান করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই দেশ প্রথম পরমানু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে। ঠান্ডা যুদ্ধের শেষভাগে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের একমাত্র মহাশক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
মার্কিন স্বাধীনতা যুদ্ধ: মার্কিন স্বাধীনতা যুদ্ধ বা মার্কিন বিপ্লবী যুদ্ধ (১৭৭৫-১৭৮৩) হল গ্রেট ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আমেরিকার ১৩ উপনিবেশের বিদ্রোহ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হয়। প্রথমে এই লড়াই শুধু উপনিবেশে সীমাবদ্ধ থাকলেও ফরাসি ও স্প্যানিশদের আগমণের ফলে তা ইউরোপ, ক্যারিবীয় ও ইস্ট ইন্ডিজে ছড়িয়ে পড়ে।
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কৃর্তক কর আরোপের কারণে মূলত: এই যুদ্ধ শুরু হয়। এই করকে মার্কিনীরা বেআইনি হিসেবে দেখত। ১৭৭৪ সালে সাফোক রিসলভস ম্যাসাচুসেটস বে প্রদেশ রাজকীয় সরকার অধিকার করলে বিদ্রোহ শুরু হয়। এর ফলে সৃষ্ট উত্তেজনার ফলে পেট্রিওট মিলিশিয়া ও ব্রিটিশ নিয়মিত সেনাবাহিনীর মধ্যে ১৭৭৫ সালে লেক্সিংটন ও কনকর্ডের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ১৭৭৬ সালের বসন্ত নাগাদ পেট্রিওটরা ১৩টি উপনিবেশে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে এবং ১৭৭৬ সালের ৪ জুন কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
এরমধ্যে ব্রিটিশরা বিদ্রোহ দমন করার জন্য বৃহৎ আকারে সেনা সমবেত করে। মার্কিন বিদ্রোহী সেনাদের বিরুদ্ধে তারা গুরুত্বপূর্ণ বিজয় অর্জন করে। এসময় জর্জ ওয়াশিংটন এর নেতৃত্বে ছিলেন। ১৭৭৬ সালে নিউইয়র্ক ও ১৭৭৭ সালে ফিলাডেলফিয়া জয় করা হয়। কিন্তু তারা ওয়াশিংটনের বাহিনীর বিরুদ্ধে চুড়ান্ত কোন হামলা করতে সক্ষম হয়নি। ব্রিটিশদের কৌশল মার্কিন অনুগতদের চালনা করার উপর নির্ভর করছিল। সামঞ্জস্যের দুরবস্থার কারণে ১৭৭৭ সালে আলবেনির বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়।
ফ্রান্স, স্পেন ও ডাচ প্রজাতন্ত্র ১৭৭৬ সালে শুরুতে গোপনে বিপ্লবীদেরকে রসদ ও অস্ত্র সরবরাহ করতে থাকে। সারাটোগায় মার্কিনীদের বিজয়ের ফলে ব্রিটেন উপনিবেশে পূর্ণ স্বশাসনের প্রস্তাব করে। কিন্তু মার্কিনীদের আপোস থেকে বিরত রাখার জন্য ফ্রান্স যুদ্ধে প্রবেশ করে। ১৭৭৯ সালে তাদের মিত্র স্পেনও এতে যোগ দেয়। ফ্রান্স ও স্পেনের যোগদান বিজয়সূচক ছিল। তারা স্থল ও নৌ ক্ষেত্রে মার্কিনীদের সহায়তা দেয় এবং ব্রিটিশদেরকে উত্তর আমেরিকা থেকে হটিয়ে দেয়।
১৭৭৮ সালের পর ব্রিটিশরা দক্ষিণ উপনিবেশগুলোতে মনোনিবেশ করে এবং ১৭৭৯ ও ১৭৮০ সালে জর্জিয়া ও সাউথ ক্যারোলিনা জয় করতে সক্ষম হয়। ১৭৮১ সালে ব্রিটিশরা ভার্জিনিয়া দখলের চেষ্টা চালায় কিন্তু ফরাসি নৌ বিজয়ের ফলে ফরাসি-মার্কিনীদের কর্তৃক ইয়র্কটাউন অবরোধ করা হয় এবং ৭,০০০ এর বেশি ব্রিটিশ সৈনিক বন্দী হয়। এর ফলে যুদ্ধ এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে ব্রিটেনের ইচ্ছায় পরিবর্তন আসে। ১৭৮২ সাল পর্যন্ত সীমিত আকারে লড়াই চলতে থাক। ১৭৮৩ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং বর্তমানকালের হিসেবে উত্তরে কানাডা, দক্ষিণে ফ্লোরিডা ও পশ্চিমে মিসিসিপি নদী দ্বারা চিহ্নিত অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে নেয়া হয়। পক্ষগুলো বৃহৎ পরিসরে একটি আন্তর্জাতিক শান্তিতে একমত হয় যাতে কয়েকটি অঞ্চল বিনিময় করা হয়। ব্যয়বহুল যুদ্ধ ফ্রান্সকে বড় অঙ্কের ঋণগ্রস্ত করে। এর ফলে পরবর্তীতে ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয়।
যুদ্ধে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি:
মার্কিনী: ২৫,০০০ জন মৃত, ৮,০০০ জন(যুদ্ধক্ষেত্রে), ১৭,০০০ জন (অন্যান্য কারণে)
মোট: মার্কিনী হতাহত ৫০,০০০ জন পর্যন্ত নিহত ও আহত।
ব্রিটিশ: ২৪,০০০ জন ব্রিটিশ হতাহত (যুদ্ধক্ষেত্রে ও রোগব্যাধি দ্বারা)।
জার্মান: ৭,৫৫৪ জন জার্মান মৃত।
ফ্রান্স: ১০,০০০ জন যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত(৭৫% সমুদ্রে)।
স্পেন: ৫,০০০ জন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877